অবশেষে জানা গেলো যে কারণে মিন্নি মুখ চেপে ধরেছিলো পুলিশ!

বরগুনা: বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।

পাঁচদিনের রিমান্ডের দুইদিন শেষে মিন্নিকে শুক্রবার (১৯ জুলাই) বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। ১৪৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের পরে আদালত মিন্নিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিন্নিকে যখন আদালত থেকে বের করা হচ্ছিলেন, তখন তাকে পুলিশের দুজন নারী সদস্য ধরে ছিলেন। পিকআপ ভ্যানে তোলার সময় মিন্নি কিছু একটা বলার জন্য উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু পাশে থাকা নারী পুলিশ সদস্য এ সময় মিন্নির মুখ চেপে ধরেন।

এদিকে মিন্নিকে যখন আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন তার বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন সেখানে ছিলেন। তিনি চিৎকার করে বলছিলেন, তার মেয়ের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

মিন্নিকে অসুস্থ দাবি করে মোজ্জাম্মেল হোসেন আরো জানান, আগের দিন একজন পুলিশ সদস্য তাদের বাসায় গিয়ে মিন্নির ওষুধের প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসেন। মেয়ে আমার জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ? সব কিছুর জন্য তিনি স্থানীয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে দায়ী করেন।

মোজাম্মেল বলেন, এসবই শম্ভুবাবুর খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে সেভ করার জন্য আমাদের বলি দেওয়া হচ্ছে।

গত ২৬ জুন রিফাতকে প্রকাশ্য সড়কে কুপিয়ে হত্যার সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি সারাদেশে আলোচনায় উঠে আসে। পরদিন রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে যে মামলাটি করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় মিন্নিকেই। গত শনিবার মিন্নির শ্বশুর তার ছেলের হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত বলে এক সংবাদ সম্মেলন দাবি করেন। এতে হত্যা মামলাটি নতুন মোড় নেয়। পরে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে বাবা মোজাম্মেল হোসেনসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ ও পুলিশের কৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আটকে যান মিন্নি। বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সোনালীনিউজ